স্বামীকে পরকীয়া থেকে রক্ষা করার উপায়
স্বামীকে পরকীয়া থেকে রক্ষা করার উপায়
এক বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্নঃ
আমার
হাজবেন্ড অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়া করে। তার সাথে আমার তেমন শারীরিক
সম্পর্কও হয় না। আমার মনে হয়, পরকীয়ার কারণে সে আমার প্রতি আগ্রহী নয়। তবে
সে আমাকে খাওয়া-পরা নিয়ে কোনো অভাবে রাখে না। আমার দুটা সন্তান আছে। এই
যন্ত্রণা আমার সহ্য হয় না। সে একবার আমার কাছে ধরা পড়ার পর ক্ষমাও চায়।
কিন্তু ঐ মেয়ের পাল্লায় পড়ে আবারও তার সাথে সম্পর্ক করে। এই ক্ষেত্রে আমার
করণীয় কী?
উত্তরঃ
আল্লাহ
তাআলা আমাদেরকে ক্ষমা করুন। পরকীয়া নি:সন্দেহে দাম্পত্য জীবন,
সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যৎ এবং সামাজিক সুস্থতা ও স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট
হুমকি। এটি নিজের হালাল স্ত্রীর সাথে আমানতের খেয়ানত, প্রতারণা ও
বিশ্বাসঘাতকতার শামিল এবং আল্লাহ তাআলা ক্রোধের কারণ।
যাহোক, কোন স্বামী এই ফিতনায় জড়িয়ে গেলে স্ত্রীর করণীয় হলঃ
১.
স্ত্রীর পক্ষ থেকে বারবার ক্রসচেক দেয়া যে স্বামীর আনুগত্যে এবং তার হক্ব
পালনের ক্ষেত্রে স্ত্রীর কোনো ধরণের কোনো ত্রুটি আছে কিনা। অধিকাংশ সময়ে
স্ত্রীরা এটা ধরতে পারেন না। তারা মনে করেন সবই করি, কোন ত্রুটি নাই।
২.
কুরআন-হাদিসের আলোকে তাকে পরকীয়া, অবৈধ প্রেমপ্রীতি ও যিনা-ব্যাভিচারের
ভয়াবহতা, ইসলামী আইন অনুযায়ী দুনিয়াতে এর কঠিন শাস্তি, আখিরাতের আযাব,
আল্লাহর অসন্তুষ্টি ইত্যাদি বিষয়গুলো বুঝানো। এ বিষয়ে কুরআন-হাদীসে
পর্যাপ্ত বক্তব্য রয়েছে। তাই এ সংক্রান্ত যে কোন ভালো ইসলামী বই বা ইসলামী
আলোচনার ভিডিও কাজে লাগানো যেতে পারে।
৩. তার হেদায়েতের জন্য দয়াময় আল্লাহর নিকট দুআ করা।
৪.
স্ত্রীর মাঝে স্বামীর নিকট অপছন্দীয় কোন আচার-আচরণ থাকলে তা পরিবর্তন করা
এবং যথাসাধ্য তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন
করা। দাম্পত্য জীবনে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক স্বামী-স্ত্রী এ
বিষয়ে অজ্ঞতা বা অবহেলার কারণে সময়ের ব্যবধানে তারা দাম্পত্য জীবনের
উষ্ণতা ও আবেদন হারায়। ফলে দুজনের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং অবশেষে ঈমানী
দূর্বলতা, কুপ্রবৃত্তির তাড়না এবং শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারা ভিন্ন পথ খুঁজা
শুরু করে।
৫.
প্রয়োজনে স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে আরেকটি বিয়ে করার সম্মতি দেয়া।
উল্লেখ্য যে, আল্লাহর দেয়া এ বিধানটির ব্যাপারে অনেক স্ত্রীর কঠোর ও ভয়াবহ
আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক দুর্বল ইমানদার স্বামী অবৈধ পথের দিকে
পা বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীও এই অন্যায়ের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবে।
৬. সম্ভব হলে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে পারিবারিক বা সামাজিক সালিশ অথবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৭.
এগুলোর মাধ্যমে কোন উপকার না হলে হয় স্ত্রীকে ধৈর্য ধারণ করে স্বামীকে এ
পথ থেকে ফিরানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যথায় সবশেষে তার সাথে
বিবাহ বিচ্ছেদ করে পৃথক হয়ে যেতে হবে।
আল্লাহ সর্বজ্ঞ।