অনেক বোনেরা গ্রুপে পোস্ট করে থাকেন
স্বামী কথা শোনে না, আমাদের বনিবনা হচ্ছে না, স্বামী পরকীয়া সমস্যা
কোন রুকইয়া করবো?
এটা কিছু আজ কথা বলা যাক।
প্রথম কথা হল, আসলে সবকিছু রুকিয়া দিয়ে সারানোর বিষয় নয়, কিছু বিষয় আছে আল্লাহ চাইলে স্বাভাবিকভাবে নিজেই হ্যান্ডেল করতে হয়।
সর্বপ্রথম
আপনি নিজেকে তৈরী করুন, সম্পূর্ণ সুন্নতী তরীকায় জীবন ধারন করুন। দেখুন
ইসলামে কী বলা হয়েছে,কীভাবে স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা বলা হয়েছে।
যেখানে আপনি নিজেই সম্পূর্ণরূপে দ্বীন মানছেন না, সেখানে অশান্তি আসাটাই স্বাভাবিক। শান্তি একমাত্র আল্লাহর পথেই নিহিত।
আপনি
ঘন্টার পর ঘন্টা সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত অথচ খেয়াল ই করলেন না, আপনার উনি
অফিস থেকে ফিরেছেন বা আপনার শ্বশুর/শ্বশুড়ীর খাবার টাইম ছিলো অথবা নামাজের
সময় চলে গিয়েছে।
এখন হয়তো আপনার মাথায় প্রশ্ন আসবে, আপনি কেন এত এত দ্বায়িত্ব পালন করবেন? সংসার কী আপনার একার?
এই
ধরণের বাজে চিন্তাগুলো আপনার মাথায় শয়তান ডুকিয়ে দেয়। কারন শয়তান এটাই
চায়, আপনার সংসার ভেঙ্গে যাক, ছোট বিষউগুলোর জের তালাক পর্যায়ে পৌঁছাক।
আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন,‘সে তাঁর স্বামীর আনুগত্য করবে’। স্বামীর বিরুদ্ধাচরণ করবে না। স্বামীর সঙ্গে কোনো ধরনের অসদাচরণ এবং বিরুদ্ধাচরণ করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির পথ থেকে অনেক দূরে সরে যাবে।
হয়তো ভাবছেন আমি একজন উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে হয়ে কেন শুধু শুধু ওর আনুগত্য করবো? ওর দাসী হবো?
আসলে
এগুলোই সংসারে অশান্তির একটা কারন।আপনি এগুলো করবেন একমাত্র আল্লাহর
সন্তুষ্টির জন্য। দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার জন্য ইগো ত্যাগ করে সামান্য
আনুগত্যতা যদি আপনার দুনিয়া ও আখিরাতে কাজে আসে, তাহলে বোন বলুন আপনার চেয়ে
কে বেশি লাভবান হতে পারে?
তিরমিযী শরীফে আছে, হযরত উম্মে সালমা রাযি. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে মহিলা এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে যে, তার স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং-১১৬১)
দেখুন,
স্বামীর সন্তুষ্টিতে জান্নাত পাওয়া কতো সহজ। আমরা পুরোপুরি রূপে ইসলামকে
আকড়ে ধরতে পারি না বলে, ইসলামকে মানতে পারিনা বলেই এতো ডিভোর্স/এতো সমস্যা।
বোন,
আপনি একটিবার নিজেকে বদলে ফেলুন, আল্লাহর পথে ফিরে আসুন, দ্বীন মানুন,
বেশি বেশি তওবা-ইস্তিগফার করুন, সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে স্বামীর
ভালোবাসা চান, নিশ্চয় আল্লাহ আপনাকে ফিরিয়ে দিবেন না।
নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বদলানোর পর ও যদি দেখেন, সংসারে অশান্তি লেগেই আছে, তবে সবরের সাথে আল্লাহর ফায়সালার উপর নির্ভর করুন কারন আল্লাহ বলেন,"আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবো"— (আল-বাক্বারাহ ১৫৫)। ধরে নিবেন আল্লাহ আপনাকে পরীক্ষা করছেন, যে কোন উপায়ে ঈমানের সাথে আপনাকে উত্তীর্ণ হতেই হবে।
যদি দুনিয়ার জীবনের এই কষ্ট সহ্য করে পরকালে চিরসুখের স্থান জান্নাত পেয়ে যান, তাহলে তো এই সামান্য কষ্টই ভালো।
এতো সব কিছুর পরেও যদি মনে হয়,না আর পারছিনা।
প্রিয় বোন!
তবে বলবো, সব কিছুর পাওনা দুনিয়াতেই আদায় করতে হয়না বরং আখিরাতের জন্যও কিছু জমা রেখে দিতে হয়...।
আল্লাহ যেন আমাদের বোঝার ও মানার তাওফিক দেন। আমিন।
কার্টেসীঃ রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপ