কার্টেসিঃ আহমাদ রবিন হাফিযাহুল্লাহ
"নিয়ত এভাবে করা যায়ঃ “আল্লাহ তায়ালা যেন এই জ্বিন শয়তানের সমস্যা থেকে আরোগ্য দেন। হিফাজত করেন। আগামীতে যেন আর আক্রমন করতে না পারে। জাদু থাকলে যেন নষ্ট হয়ে যায়। জাদুকর যেন পরাস্থ হয়।”
অন্যান্য রুকইয়াহর মত এই রুকইয়াহতেও কয়েকটি কাজঃ
১। তেলাওয়াত করা (তেলাওয়াত করতে না পারলে অডিও শোনা)
২। পানি খাওয়া
৩। গোসল করা।
৪। মধু, কালোজিরা, অলিভ ওয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করা।
এক. প্রতিদিন যা যা তেলাওয়াত করতে হবেঃ
১। ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, এশার পর সুরা মূলক।***
২। সুরা বাকারা তেলাওয়াত করা। পুরোটা না পারলে অন্তত ৮০-১০০ আয়াত তেলাওয়াত করা।***
৩। আয়াতুল কুরসি ৩৩ বার।***
৪। সুরা সফফাত, জিন, দুখান, যিলযাল, ইখলাস, ফালাক, নাস এক বসায় একবার করে পড়া। *
৫। সুরা আলে ইমরান, তাওবাহ, কাহাফ, মারইয়াম, হা-মীম সাজদাহ (সুরা ফুসসিলাত), সুরা আর-রাহমান, সুরা তাকভীর, সুরা ইনফিতার, সুরা বুরুজ, সুরা ত্বরিক, সুরা আ’লা এবং কুরআনের শেষ ১৫ টি সুরা। সব একবার করে। (যে কয়টা পড়তে পারেন পড়বেন। সবগুলা পড়তে পারলে বেশি ভাল ইংশা আল্লাহ।)
৬। এছাড়া যাদেরকে জিন শারিরিকভাবে লাঞ্চিত করে, প্রাইভেসি নষ্ট করে রুকইয়াহ যিনার আয়াত, সুরা ইউসুফ, সুরা নূর পড়বেন।
৭। এই দুয়াগুলো প্রতিদিন ১০ বার করে পড়া। (হায়েজ, নেফাস থাকলেও পড়তে পারবেন।)**
দেখুন – পিরিয়ড অবস্থায় আমল করবেন কিভাবে?
৮। এই দুআটা ফজরের পর ১০০ বার পড়া।
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ ، وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
- রুকইয়াহ যিনার আয়াত লিস্ট এই লিংকে পাবেন – রুকইয়াহ যিনা! ; উপকারিতা, আয়াতের লিস্ট ও ডাউনলোড
- যদি দোয়া এবং আয়াতগুলোর পিডিএফ পড়তে চান তাহলে এখানে পাবেন – ruqyahbd.org/ayat
যদি তেলাওয়াত করতে না পারেন তাহলে যেসব অডিও শুনবেন। (তেলাওয়াত সহিহ না, হায়েজ-নেফাস চলে এসব কারণে)
১। আট সুরার রুকইয়ার অডিও ( সুরা ফাতিহা, সুরা ইয়াসিন, সুরা সফফাত, সুরা জিন, সুরা দুখান, সুরা যিলযাল, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস) এই লিংক থেকে ৮ নং টা- ডাউনলোড করুন
২। উপরের লিংক থেকেই সুরা বাকারার অডিও (২৫ নং অডিও ফাইল), আয়াতুল কুরসি (৯ নং অডিও ফাইল), তিনকুলের অডিও (৭ নং অডিও ফাইল), রুকইয়াহ যিনার অডিও (২৭ নং / পরের পেজে ১৫ নং অডিও ফাইল)।
৩। কুরআনুল কারীমের অন্যান্য সুরার জন্য এই লিংক- এখানে দেখুন
( যারা চিন্তায় পড়েছেন এতকিছু একদিন কিভাবে পড়বেন বা শুনবেন তাদের বলছি, চিন্তার কিছু নেই ইংশা আল্লাহ। আপনি প্রতিদিন তেলাওয়াত বা শোনার পিছনে ৩-৪ ঘন্টা সময় দিবেন। সেটাও না পারলে যতটুকু পারেন ততটুকুই দিবেন। মনে রাখবেন, আপনি যেমন ইফোর্ট দিবেন, রেজাল্টও তেমন পাবেন। এবার আপনার বিবেচনা কতটা ইফোর্ট দিবেন। আপনি যদি ১৮ ঘন্টা ইফোর্ট দিতে পারেন দিনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।)
দুই. মধু, কালোজিরা, অলিভ ওয়েল, পানি ব্যবহার করা এর জন্য এই লিংকের “খ” পয়েন্টে বলা ‘রুকইয়ার সাধারণ আয়াত আয়াত’গুলো এবং উপরে ৭ নং বলা দুয়াগুলো কয়েকবার করে পড়ে ফু দিন। – খ পয়েন্ট ও প্রয়োজনীয় রুকইয়ার আয়াতের তালিকা
পানি, মধু, কালোজিরা আপনি যতটুকু খেতে পারেন প্রতিদিন খাবেন। একসাথে শরবত করেও খেতে পারেন। আর তেল প্রতিরাতে ঘুমের আগে সারা গায়ে মালিশ করে ঘুমাবেন।
তিন. গোসলের জন্য উপরের পড়া পানি থেকে এক গ্লাস পানি গোসলের পানিতে মিশিয়ে নিবেন। আর আরবি মাসের মাঝের এবং শেষের দিকে ৩-৪ দিন বরই পাতার গোসল দিতে পারেন। বিস্তারিত – বরই পাতার গোসল
প্রাত্যহিক আরও কিছু অবশ্য পালনীয় আমলঃ
১। ফরয ইবাদাতে মনযোগী হওয়া। অবহেলা না করা। গান-বাজনা, নাটক-সিনেমা, প্রেম-ভালবাসাসহ যাবতীয় কবীরা গুনাহ থেকে তওবা করা, বিরত থাকা।
২। সকাল, সন্ধ্যা ও ঘুমের আগের মাসনুন আমল প্রতিদিন করবেন। মেয়েরা হায়েজ, নেফাস থাকলেও করবেন। দেখুন- মাসনুন আমল
যেদিন সময় পাওয়া যাবে যেদিন পূর্ণাঙ্গ মাসনুন আমল করা। এই এপ থেকে করতে পারবেন।
- এর অ্যান্ড্রয়েড ভার্শন এখানে পাওয়া যাবে-
- আইওএস (আইফোনের) ভার্শন পাওয়া যাবে এখানে- http://bit.do/masnun-ios
- আর ওয়েব সংস্করণ আছে এই লিংকে- https://ruqyahbd.org/dua
৩। সাধ্যানুযায়ী ইস্তেগফার করা। মাঝে মাঝে সাদকাহ করা। তাহাজ্জুদ, সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করা।
দেখুন – দোয়া কবুলের বিশেষ আমল, স্থান ও সময়
দেখুন – দোয়া কবুলের বিশেষ আমল, স্থান ও সময়
( সেলফ রুকইয়াহ করলে জিন হাজির হবে না ইংশা আল্লাহ। আর আপনি নিয়তও এমন করবেন না যে, জিন থাকলে যেন হাজির হয়। বরং জিন যেন চলে যায় পরাস্থ হয়ে, আপনি যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান এই নিয়ত করবেন। এরপরেও যদি জিন হাজির হয়ে যায় তাহলে কি করতে হবে তা নিচে লিংকের পয়েন্ট “ঘ” তে আলোচনা করা হয়েছে।
আল্লাহ আপনাকে এমন সুস্থতা দিন যেন আর কোনো অসুস্থতা বাকি না থাকে। আমীন।