আমাদের বাড়িঘরের ৫টি স্থানে শয়তান ‘বসত’ গড়ে:
১) বিছানা: দীর্ঘদিন যাবত যে বিছানায় কেউ শোয়নি শয়তান এমন বিছানা দখল করে বসে। নবীজি (ﷺ) বলেছেন, পুরুষের জন্য একখানা চাদর, তার স্ত্রীর জন্য একখানা চাদর এবং তৃতীয়টি অতিথির জন্য। আর চতুর্থটি শয়তানের জন্য (মুসলিমঃ ২০৮৪)।
করনীয়: এজন্য অব্যবহৃত বিছানা ভাঁজ করে রাখা নিরাপদ।না হলে নিয়মিত বিছানা ঝাড়া উচিত। অথবা আয়াতুল কুরসি ও রুকইয়ার আয়াত পড়ে ফুঁ দেয়া পানি ছিটানো উচিত। দুই বা তিনদিন পরপরই এমনটি করা উচিত।
২) বাথরুম: এটা সবার জানা আছে। বাথরুমে সবচেয়ে দুষ্ট আর খবিস প্রকৃতির শয়তানরাই থাকে। এজন্য সেখানে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা ভীষণ জরুরী। নবীজি (ﷺ) বলেছেন, এসব পায়খানার স্থান হচ্ছে (জ্বিন ও শয়তানের) উপস্থিতির স্থান। তাই পায়খানায় যাবার সময় এ দোয়া পড়তে হবেঃ
أعوذُ باللهِ مِن الخُبُثِ والخبائثِ
অর্থাৎ- আমি নাপাক নর-নারী শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। (আবু দাউদঃ ০২)
৩) কাপড়: দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রাখা অব্যবহৃত, অধোয়া জামাকাপড়। আলমারি ওয়ার্ডরোবে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা পোশাকও এই ঝুঁকির আওতাযুক্ত। নবীজি (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের জামাকাপড় ভাঁজ করে রাখো। কারণ, এসব জামাকাপড়ের কাছে দুষ্টজ্বিনেরা ফিরে ফিরে আসে। আর শয়তান ভাঁজ করা জামাকাপড় পড়েনা। মেলে দেয়া পোশাক পেলে পড়ে। (সিলসিলাহ যয়ীফাঃ ২৮০১)।
করনীয়: আমরা অনেকেই জামাকাপড় ঝুলিয়ে রাখি। হাতের নাগালে রেখে, যখন ইচ্ছা পরার জন্য আমরা সাধারণত জামাকাপড় লটকে রাখি। যে কোনো ক্ষতি-অনিষ্ট থেকে বাঁচতে হলে, এসব পোশাকে কুরআন পড়া পানি ছিটিয়ে দেয়া নিরাপদ। মাঝেমধ্যে আলমারি, ওয়ার্ডরোব খুলে জামাকাপড়ে সূরা ফাতিহা ও আয়াতুল কুরসি পড়ে ফুঁ দিতে পারি।
৪) প্রাণী/মানুষের মূর্তি ও পুতুল: এসব পুতুল-মূর্তি ঘরে থাকলে, ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেনা। ফেরেশতার আগমন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে, এসব পুতুল-মূর্তির আড়ালে দুষ্ট জ্বিন আশ্রয় গ্রহণ করে। নবীজি (ﷺ) বলেছেন, যে ঘরে কুকুর ও মূর্তি-ভাস্কর্য থাকে, সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করেনা (মুসলিমঃ ২০০৬)। আরেক বর্ণনায় আছে, ঘরে ছবি থাকলেও ফেরেশতা প্রবেশ করেনা।
৫) চুলা: আগুন জ্বালানোর স্থান জ্বিন-শয়তানের খুবই প্রিয় জায়গা। কারণ তারা আগুনেরই সৃষ্টি। এজন্য যখনই আগুন বা রান্নাবান্নার কাজে চুলার কাছে যাবো, মুখে আল্লাহর যিকির করার অভ্যেস গড়ে তুলবো ইন শা আল্লাহ।
©